Stories Online

Stories Online  




আচ্ছা যারা ভুততত্ত্ব টা মানেন না তারা কি ভুতের গল্প শুনেও ভয় পান না , আচ্ছা রাতের বেলায় আপনি শুয়ে আছেন হটাৎ তীব্র উৎকট গন্ধ চারিদিকে ,যার কোনও যুক্তি সংগত কারণ নেই আপনার মনে একবারের জন্যও কি ভয় হবে না এমন দাবি কজন করতে পারেন ।
এক ভদ্রলোক কোন এক শীতের রাতে শেষ ট্রেন এ বাড়ি ফিরছিলেন রানাঘাট লোকালে। রানাঘাট লোকালের যে চিত্র সাধারণের মনে গাঁথা আছে তেমন কিন্তু ছিল না সেদিন, ডিসেম্বর এর শীতের রাত, পথের কোলাহল থেমে গিয়েছে। শেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরা দু-একজন নিরুপায় পথিক। কোন ঘটনা যার কোন যুক্তি সংগত ব্যাখ্যা হাতের কাছে নেই এমন কিছু যদি ঘটে যাই তবে মানুষ কিছু টা দন্দে পড়ে যায়, কারণ মন সর্বদাই সিধান্তে উপনীত হতে চায়।
সেদিন সোদপুর অবধি যাও বা লোক ছিল সবাই একসাথে নেমে গেল সোদপুর এ ,ভদ্রলোক একাই ছিলেন কামরায়। ট্রেন এর গতিও ও খুব ধীর, শীতের দিন বলে হয়ত গাড়িটা আসতে চলছে ,কিম্বা ড্রাইভার এর ঘুম পেয়ে থাকবে নানান সাতপাঁচ ভাবছেন আর মনে মনে বিরক্তি তীব্র থেকে তীব্রতর হছিল কোনমতে ট্রেন টিটাগড় স্টেশন এসে দাঁড়ালো।
যারা জানেন তাদের কাছে ব্যাখ্যা কারবার প্রয়োজন নেই কিন্তু যারা এই পথে কোন দিন আসা যাওয়া করেন নি তাদের জন্য বলি এই লাইনে ট্রেন সোদপুর ক্রস করলে স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রী হাল্কা হতে থাকে দিনের বালাতেও এমনই হয়ে থাকে এ লাইন এটাই দস্তুর , তাই সেদিনও এর অন্যথা হয় নি। তার ওপর ভয়ানক শীতে লোক সাধারণত খুব একটা দেখা যায় না রাস্তায়।অন্যান্য দিন কিছু হকার দেখা যায় আজ তাদের ও দেখা নেই। ভদ্রলোক বড় একাকী বোধ করছেন, একে শীত তার ওপর ট্রেন এর গতি, কতটা সময় পেরিয়ে গেল ট্রেন যেন চলতেই চায় না , ভদ্রলোক মনে মনে একজন সহযাত্রী কামনা করছিলেন এমন পরিস্থিতিতে এমনই স্বাভাবিক
হ্যাঁ পেলেন একজন সহযাত্রী অন্য এক ভদ্রলোক উঠলেন টিটাগড় স্টেশন থেকে। প্রথমটা কি জানি চোর বা ডাকাত নয়তো এমন একটা আশঙ্কা মনে থাকে সকলেরই , সবাই প্রথমে যা ভাবে আর কি ,এমন পরিস্থিতি হলে।যাইহোক কিছুটা সময় পেরনোর পর ভয় কেটে গেল , লোকটাকে তেমন ভয়ের কিছু মনে হল না দেখতে খুবই সাধারণ চোখে চশমা হাই পাওয়ারের ,পরনে লক্ষ্য করার মত একটি শাল। নিজে থেকেই ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করলেন কতদূর যাবেন? আগের ভদ্রলোক জানালেন তিনি শেষ বধি যাবেন অর্থাৎ রাণাঘাট, শেষ স্টেশন। একটা জিনিষ ভদ্রলোক আগন্তুকের মধ্যে লক্ষ করলেন তাহল দারুণ এক হতাশা, তেমন বিষণ্নচিত্ত ব্যক্তি আগে কখনো দেখেছেন বলে তিনি মনে করতে পারলেন না, কি এক দারুণ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন ব্যক্তিটি, বিবর্ণ মুখে বলি রেখার দাগ, কণ্ঠস্বরে কি নিদারুণ বেদনার ছোঁয়া।
তবে সে যাই হোক এক শীতের রাতে এই বা কম কি একজন সঙ্গী তো বটে , একটু বাদেই ব্যাপারটা জমে গেল ভদ্রলোকের বর্তমান আর অতীত এই দুই বিষয় সমান ধারণা. উনি বললেন উনি রানাঘাট মানে লাস্ট স্টপ অবধি যাবেন . প্রথম ভদ্রলোকটির কথাটা শুনে বেশ ভাল লাগলো , মনে মনে ভাবলেন আর তাকে একা একা যেতে হবে না একজন সঙ্গী পাওয়া গেল ট্রেন এখন বেশ গতি নিয়েছে
কথায় কথায় জানা গেল ভদ্রলোক “CESC” র Power Plant এ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন আজ তাকে একটি বিশেষ কাজে কোম্পানি ডেকেছিল কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর বললেন
“জানেন জীবন আমি অনেক পরের উপকার করেছি কিন্তু আজ এই জীবন সায়াহ্নে এসে বুঝতে পারছি কি ভুল টাই নাহ করেছি জীবন ভোর, আর বললেন টাকা টা জীবনে থাকলে হয়তো ! একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস, অনেক কষ্ট করে এক অদ্ভুত ঘটনা জানা গেল তিনি নৈতিক বলে তার অফিসের সহকর্মীরা তার পেছনে লেগেছে এমন ভাবে লেগেছে জাতে তার চাকরী করা অসম্ভব হয়ে উঠে , সেই কারণে আজ কোম্পানি তাকে একটি বিশেষ ব্যাপারে যদিও সেই বিশেষ ব্যাপারের কোন বর্ণনা তিনি দিলেন না ।
পায়রা ডাঙ্গা স্টেশন আসছে ভদ্রলোক বললেন দরজা টা বন্ধ করে দিতে শীত করছে তার দরজা টেনে ফিরে এসে আর ট্রেন এর কামরায় কাওকে দেখা যায় নি পর দিন অনেক চেষ্টা করেও কোন দুর্ঘটনার সংবাদও পাওয়া যায়নি।




Written By .....@Sibasish Acharyya

No comments:

Post a Comment